খুব সহজ উপাইয়ে স্মার্ট আইডি কার্ড বের করার নিয়ম দেখে নিন ২০২৫

স্মার্ট আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

স্মার্ট আইডি কার্ড বের করার নিয়ম জানেন তো? যদি স্মার্ট আইডি কার্ড বের করার নিয়ম না জেনে থাকেন তাহলে সমস্যা নেই আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে স্মার্ট আইডি কার্ড বের করার নিয়ম ও বাংলাদেশের স্মার্ট আইডি কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আপনাকে জানাবো।

জাতীয় নির্বাচন কমিশনের জরিপের পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী,বর্তমানে বাংলাদেশ প্রায় ৩ কোটি থেকে ৬ কোটি নাগরিকের বেশি নাগরিক তাদের ভোটার স্মার্ট আইডি কার্ড তাদের হাতে পাননি। ২০১৬ সালে ভোটার স্মার্ট কার্ড বাংলাদেশে চালু হয় ও বর্তমান সময় পর্যন্ত এই স্মার্ট কার্ড বিতরণ চলমান রয়েছে। তবে এখন হয়তো আপনার মাথায় প্রশ্ন এসেছে, স্মার্ট কার্ডে কিভাবে পাবো আমি? তবে এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

স্মার্ট আইডি কার্ড কি

স্মার্ট আইডি কার্ড হচ্ছে এমন এক ধরনের কার্ড যার মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য ও পেশাদার তথ্যের ডিজিটাল কার্ডে। স্মার্ট আইডি কার্ডে মাইক্রোচিপ থাকে।

স্মার্ট কার্ড কিভাব পাবো আমি

যারা ২০১৬ সালের পূর্বে ভোটারের জন্য আবেদন করেছেন বা ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন, তারা যদি এখনও স্মার্ট আইডি কার্ড না পেয়ে থাকেন, তাহলে স্মার্ট কার্ড সংগ্রহের জন্য উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে যেতে পারেন ও “দুই হাতের ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশের ছবি” সহ বায়োমেট্রিক তথ্য জমা দিতে হবে। উক্ত বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করার কিছুদিনের মধ্যেই উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে স্মার্ট আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে যারা নতুন ভোটার হয়েছেন স্মার্ট আইডি কার্ড হাতে পাননি তারা উপজেলা নির্বাচন কমিশনের অফিসে স্ব -শরীরে গিয়ে স্মার্ট কার্ড উত্তোলন করতে পারবেন। তবে এবার স্মার্ট আইডি কার্ড বের করার নিয়ম জেনে নেওয়া যাক।

স্মার্ট আইডি কার্ড বের করার নিয়ম ২০২৫

আপনার স্মার্ট আইডি কার্ড ইস্যু হয়েছে কিনা সেটি জানার জন্য অবশ্যই আপনাকে স্মার্ট আইডি কার্ড বের করার নিয়ম অনুসরণ করতে হবে এজন্য আপনাকে যে সকল ধাপ অনুসরণ করতে হবে তা নিন্মরূপ:

জাতীয় নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। অথবা আপনার ডিভাইস থেকে সার্চ করুন services.nidw.gov.bd/nid-pub/card-status। ওয়েবসাইটে ভিজিট করার পর জাতীয় পরিচয় পত্র জন্ম তারিখ এবং ক্যাপচা পূরণ করতে হবে। অবশ্যই এ সকল তথ্য প্রদান করার পর তথ্য পুনরায় দেখে নিন।

অতঃপর সাবমিট বাটনে ক্লিক করার পরে, আপনার ভোটার এ স্মার্ট আইডি কার্ডটি ইস্যু হয়েছে কিনা জানতে পারবেন।

যদি আপনার স্মার্ট আইডি কার্ড ইস্যু হয়ে থাকে তাহলে শীঘ্রই আপনি এটি উত্তোলন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে স্মার্ট আইডি কার্ড উত্তোলনের জন্য সরাসরি উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।

SMS এর মাধ্যমে স্মার্ট আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

অনলাইনের পাশাপাশি খুব সহজেই SMS এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় পত্র “স্মার্ট আইডি কার্ডে” রূপান্তরিত হয়েছে কিনা এটি জানা যায়। এটি জানার জন্য অবশ্যই আপনাকে আরও কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে। নিম্মে এ সকল ধাপে সুবিন্যস্তভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে:

আপনার মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করুন SC<space>NID<space>NID নম্বর। উক্ত মেসেজটি টাইপ করে ১০৫ নম্বরে সেন্ড করুন। যেমন: SC NID 0123456789।

উদাহরণ:

১০৫ নম্বরে SMS সেন্ড করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরতি SMS এর মাধ্যমে আপনার Smart Card status প্রদর্শিত হবে।

স্মার্ট কার্ড বিতরণের সময়সূচি ২০২

সাধারণত বাংলাদেশের সকল অঞ্চলে একসাথে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হয় না ধীরে ধীরে প্রতিটি অঞ্চলে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হয়। এক্ষেত্রে যে অঞ্চলে বা নির্বাচন কমিশনের অফিসের অধীনে যে সকল অঞ্চলে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে উক্ত অঞ্চলে ৭ দিন পূর্বে বিতরণের তারিখ ঘোষণা করা হয়। তবে আপনি যদি আপনার স্মার্ট কার্ড এর বিতরণের সময়সূচি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে নিচের ধাপটি অনুসরণ করতে হবে।

  1.  আপনার ডিভাইসে যে কোনো ব্রাউজারে nidw.gov.bd টাইপ করুন।।
  2. ওয়েবসাইটের NID অনলাইন সার্ভিসেস লিংকের অন্যান্য ট্যাবে ক্লিক করে জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ লিংকে প্রবেশ করুন এবং আপনার তথ্য প্রদান করুন। এই তথ্যগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে
    • NID নম্বর বা Form নম্বর।
    • জন্ম তারিখ।
  3. সকল তথ্য প্রদান করার পর সাবমিট বাটনে ক্লিক করার পর আপনি আপনার কার্ডের বর্তমান স্ট্যাটাস ও বিতরণের সময়সূচি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

তবে আপনি যদি চান সেক্ষেত্রে, নির্বাচন কমিশনের হেল্পলাইন নম্বর অর্থাৎ ১০৫ কল করে আপনার স্মার্ট কার্ড বিতরণের সময়সূচি জানতে পারবেন প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে।

স্মার্ট কার্ড আবেদন ফরম পূরণের নিয়ম

স্মার্ট কার্ড আবেদন ফরম পূরণের জন্য আপনাকে উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে স্ব-শরীরে উপস্থিত হতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে আরও কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে। যেমন:

  • অনলাইন করা জন্ম নিবন্ধন নম্বর বা সনদপত্র।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র।
  • পিতা /স্বামী ও মাতার জাতীয় পরিচয় পএের সত্যায়িত কপির ফটোকপি।
  • ঠিকানার প্রমাণের জন্য ইউটিলিটি (বিদ্যুৎ বা পানি বা গ্যাস) বিলের ফটোকপি প্রদান করতে হবে।

উপজেলা নির্বাচন কমিশনের অফিসে গিয়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে স্মার্ট কার্ডের জন্য আবেদন সম্পর্কে জানালে তিনি আপনাকে একটি ফর্ম প্রদান করবেন ফর্মে সকল তথ্য আপনি নির্ভুলতার সাথে পূর্ণ করুন ও আপনার দুই হাতের ১০ আঙুলের ছাপ প্রদান করুন ও চোখের আইরিসের বায়োমেট্রিক ছবি প্রদান করুন।

স্মার্ট কার্ড তুলে না থাকলে যেভাবে পাবেন

সাধারণত আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু হওয়ার পরেও স্মার্ট কার্ড তুলতে পারেননি,এক্ষেত্রে তারা স্মার্ট কার্ড তোলার জন্য নিজের এলাকার উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে গিয়ে স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।

স্মার্ট কার্ড পেতে করণীয় কি

স্মার্ট কার্ড চেক করার পর যদি দেখা যায় আপনার স্মার্ট কার্ডটি ইস্যু হয়নি অর্থাৎ তৈরি করা হয়নি। সেক্ষেত্রে অনলাইনের ভোটার আইডি কার্ড (অনলাইন কপি) ডাউনলোড করে আপনি এটি লেমিনেটিং করে ব্যবহার করতে পারেন। উল্লেখ করছে ২০১৬ সালের পূর্বে,স্মার্ট কার্ড বিতরণ করার পূর্বে উক্ত অনলাইন কপি লেমিনেটিং করে প্রদান করা হতো। এই অনলাইন কপি দিয়ে hআপনি সকল ধরনের সরকারি কিংবা বেসরকারি কাজ করতে পারবেন।

স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম

স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করার কোন নিয়ম নেই তবে আপনি যদি কার্ড এর স্ট্যাটাস চেক করে দেখতে পান আপনার স্মার্ট কার্ড ইস্যু হয়েছে সে ক্ষেত্রে আপনি দ্রুত আপনার উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে গিয়ে স্মার্ট কার্ডটি সংগ্রহ করতে পারবেন আপনার তথ্য ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে।

স্মার্ট কার্ড জরুরী প্রয়োজন হলে করণীয় কি

বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে জরুরিভাবে স্মার্ট কার্ড প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে, আপনি সর্বপ্রথম যে এলাকায় ভোটার নম্বর নিবন্ধন করেছেন অর্থাৎ জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করেছিলেন উক্ত এলাকার নির্বাচনীয় কমিশন অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে।

এরপর উক্ত দায়িত্বও কর্মকর্তাকে আপনার বর্তমান সমস্যা ও আপনি স্মার্ট কার্ড পাননি এ মর্মে জানাতে হবে। কমিশন অফিসের দায়িত্ব কর্মকর্তা আপনাকে সমস্যার সমাধানের জন্য যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন তা এ সম্পর্কে আপনাকে অবহিত করবেন ও এটি সম্পূর্ণ হলে আপনাকে স্মার্টআইডি কার্ড প্রদান করবেন।

কি কারণে স্মার্ট কার্ড বিতরণ দেরি হচ্ছে

সাধারণত বায়োমেট্রিক তথ্যের কারণে স্মার্ট আইডি কার্ড পেতে বিলম্ব হয় বাংলাদেশের অনেক নাগরিক রয়েছে যাদের বায়োমেট্রিক তথ্য (১০ আঙ্গুলের ছাপ, আইরিশের ছবি ও রক্তের গ্রুপ) জাতীয় নির্বাচন কমিশন সার্ভারে নেই। মূলত এসব তথ্য না থাকার ফলে স্মার্ট কার্ড বিতরণ সম্ভব হচ্ছে না।

স্মার্ট আইডি কার্ডের মেয়াদ কতদিন

সাধারণত ১৫ বছর মেয়াদে জাতীয় পরিচয় প্রদান করা হয়ে থাকে এমন কথা নিশ্চয় শুনেছেন তবে জাতীয় পরিচয় পত্রের মেয়াদ এটি আজীবন ব্যবহার করা যাবে অর্থাৎ স্মার্ট আইডি কার্ডের মেয়াদ আজীবন বা মেয়াদহীন।

আমার কার্ডের আইডি নাম্বার কিভাবে পাবো

বর্তমানে যে সকল, যে সকল ভোটার আইডি কার্ড প্রদান করা হয় অনলাইন কপি তার নম্বর সংখ্যা ১০টি। উক্ত এই দশটি নাম্বার হচ্ছে আপনার স্মার্ট কার্ডের আইডি নাম্বার।

পুরাতন ভোটাররা কিভাবে স্মার্ট আইডি কার্ড পাবেন

পুরাতন ভোটারদের স্মার্ট আইডি কার্ড পেতে হলে তাদের বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে দুই হাতে দশ আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিস স্ক্যান করতে হবে, তবেই স্মার্ট কার্ডটি প্রিন্টের জন্য প্রস্তুত হবে। তবে পুরাতন ভোটের রাজ্য যদি এখনই স্মার্ট কার্ড আইডি কার্ড গ্রহণ করতে চান তাদের আরও কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে যেমন:

  • পুরাতন আইডি কার্ড অর্থাৎ অনলাইন কপি নিয়ে উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে যেতে হবে।
  • অফিস কর্মকর্তা থেকে ফটোকপিতে স্বাক্ষর ও ও নির্বাচন কমিশন থেকে আরও আরও কিছু কাগজপত্র সংগ্রহ করে ঢাকা নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে যেতে হবে।
  • ঢাকা নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে আপনার বাইবেটিকস ও ওটা একটা তথ্য যাচাই করার পর আপনাকে একটি স্লিপ প্রদান করবে। উক্ত স্লিপটি একটি নির্ধারিত দিনে আপনার নিজ উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে জমা দিতে হবে।
  • স্লিপটি জমা দেওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই আপনি স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।

স্মার্ট কার্ড সম্পর্কিত বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন সমূহ

স্মার্ট কার্ড পেতে কত সময় লাগে?

সাধারণত জাতীয় পরিচয় পত্রের অনলাইন কপি পাওয়ার ১ থেকে ২ বছর পরে স্মার্ট কার্ড পাওয়া যায় এক্ষেত্রে উক্ত নাগরিককে অপেক্ষা করতে হবে। তবে বায়োমেট্রিক তথ্য ছাড়া হাতে পাওয়া যায় না।

নাম্বার দিয়ে কিভাবে স্মার্ট আইডি কার্ড চেক করা যায়?

নাম্বার দিয়ে স্মার্ট আইডি কার্ড চেক করার জন্য আজ বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে স্মার্ট কার্ড চেক করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে নিম্নোক্ত লিংকে প্রআরও করে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও জন্মতারিখ প্রদান করে স্মার্ট আইডি কার্ড চেক করতে পারবেন।

স্মার্ট আইডি কার্ড ডাউনলোড করা যায় কি?

না, স্মার্ট আইডি কার্ড ডাউনলোড করা যায় না কারণ স্মার্ট আইডি কার্ড ডিজিটাল কার্ড এর মধ্যে মাইক্রোচিপ থাকায় এটি অনলাইন থেকে ডাউনলোড করা যায় না।

স্মার্ট কার্ডের আবেদন কিভাবে করব?

স্মার্ট কার্ডের আবেদন সাধারণত পুনরায় করার প্রয়োজন হয় না। স্মার্ট কার্ডের আবেদন তখনই সম্পন্ন হয় যখন প্রথমবার জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন সম্পূর্ণ করা হয়।

শেষ কথা

প্রত্যাশা করি আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে, স্মার্ট আইডি কার্ড বের করার নিয়ম ও স্মার্ট কার্ড সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আপনাকে জানাতে পেরেছি। আপনি যদি নতুন নাগরিক হন তাহলে স্মার্ট আইডি কার্ড বের করার নিয়ম অনুসরণ করে আপনার স্মার্ট কার্ডের স্ট্যাটাস চেক করুন ও পুরাতন ভোটার হয়ে থাকলে আপনার বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করে উপজেলা নির্বাচন কমিশন থেকে স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করুন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *