৬০ সেকেন্ডে ভোটার নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক করুন সহজেই

৬০ সেকেন্ডে ভোটার নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক করুন সহজেই

জাতীয় পরিচয় পএ সংক্ষিপ্ত আকারে আইডি কার্ড প্রতিটি দেশের বসবাসকারী নাগরিকের নাগরিকত্বের প্রমাণ পএ। কারণে কিংবা অকারণে আমাদের জাতীয় পরিচয় পএের অনলাইন যাচাই করা প্রয়োজন নয়। বিশেষ করে এটি নতুন ভোটারদের সাথে বেশি হয়ে থাকে। NID নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক কিংবা ভোটার নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক বর্তমানে ঘরে বসে মোবাইল কিংবা কম্পিউটারের মাধ্যমে চেক করা যায় খুব সহজে।

আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে ভোটার নাম্বার কিংবা NID নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক করা উপায় জানানোর পাশাপাশি জাতীয় পরিচয় পএ অনলাইন যাচাই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাবো। তাহলে আলোচনাটি শুরু করা যাক

ভোটার নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক

বর্তমানে সাধারণত ১৬ বছর বয়স হলেই জাতীয় পরিচয় পএ কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন যেকোনো ব্যক্তি। প্রাথমিকভাবে পরিচয় পত্র আবেদন করার সময় আবেদনকারীকে ভোটার নাম্বার প্রদান করা হয়ে থাকে। এই ভোটার নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক খুব সহজে করা যায়।

ভোটার নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক করার জন্য প্রাথমিকভাবে একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটার প্রয়োজন হবে ও যার ভোটার নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক করা হবে অবশ্যই তার উপস্থিত থাকা লাগবে ফেস ভেরিফিকেশন অর্থাৎ তার মুখে ছবির সাথে NID সার্ভারের ছবির ভেরিফিকেশনের জন্য। ভোটার নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক করার জন্য যে সকল প্রয়োজনীয় তথ্য ও প্রয়োজন হবে তা হলো:

  • ভোটার নাম্বার বা টোকেন নাম্বার বা ফরম নম্বর বা স্লিপ নম্বর।
  • সচল মোবাইল নম্বর।
  • জন্মতারিখ (অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্রের আবেদনের সময় যে জন্ম তারিখ প্রদান করেছেন সেটি হতে হবে)।

আপনি সর্বমোট ৭টি ধাপ অনুসরণ করে খুব সহজে ভোটার নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক করতে পারবেন। একসকল ধাপ নিন্মে উপস্থাপন করা হয়েছে:

ধাপ: ১ নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন

যেকোনো ডিজিটাল ডিভাইস যেমন মোবাইল কিংবা কম্পিউটারের মাধ্যমে যে কোন ব্রাউজারের অ্যাড্রেস বারে টাইপ করুন services.nidw.gov.bd বা অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যান এখানে ক্লিক করুন। জাতীয় নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর “অ্যাকাউন্ট নেই” সেকশন “রেজিস্টার করুন” বাটনে ক্লিক করুন।

আবেদনকারী যদি পূর্বে রেজিস্ট্রেশন করে থাকেন তাহলে নিচে থাকা লগইন ফর্মে ভোটার নম্বর ও জন্ম তারিখ প্রদান করে লগইন করতে হবে।

তবে আবেদনকারী যদি রেজিস্ট্রেশন পূর্বে করে না থাকেন তাহলে অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।

ধাপ: ২ রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া

রেজিস্ট্রেশন করার জন্য রেজিস্ট্রেশন ফর্মে 12 ডিজিটের ভোটার নম্বর ও সঠিক জন্ম তারিখ প্রদান করতে হবে এবং সঠিক ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।

ধাপ: ৩ ঠিকানা

অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশনের গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ ঠিকানার তথ্য প্রদান করা। জাতীয় পরিচয়পত্রের আবেদন করার সময় আপনি যে আপনার বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা প্রদান করেছেন সেই ঠিকানা নির্বাচন করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ: ৪ মোবাইল নম্বর প্রদান ও ভেরিফিকেশন

চতুর্থ ধাপে আপনাকে আপনার একটি সচল মোবাইল নম্বর বা আবেদনকারীর সচল একটি মোবাইল নম্বর প্রদান করতে হবে এবং পরবর্তী বাটনে ক্লিক করতে হবে। পরবর্তী বাটনে ক্লিক করার সাথে সাথে তৎক্ষণাৎ উক্ত মোবাইলটিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশন থেকে একটি ভেরিফিকেশন কোড আবেদনকারীর উক্ত সচল মোবাইল নম্বরে আসবে। উক্ত কোডটি প্রদান করে বহাল বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ: ৫ জাতীয় পরিচয় পএ বা আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

৪র্থ ধাপে আপনি যে সকল তথ্য পেয়েছে সে সকল তথ্য অবশ্যই আপনার কপি করে রাখতে হবে এবং পরবর্তীতে আবেদনকারীর আইডি নাম্বার ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লগইন করতে হবে। তবে লগ ইন করার জন্য অবশ্যই ফেস ভেরিফিকেশন বা ছবি ভেরিফাই করতে হবে এর জন্য গুগল প্লে স্টোর থেকে এনআইডি ওয়ালেট নামক একটি ইনস্টল থাকতে হবে।

আবেদনকারীকে যে সকল ধাপ অনুসরণ করতে হবে তাহলো :

  • NID wallet অ্যাপটি অপেন করুন।
  • কম্পিউটার থাকা QR কোড স্কান করুন NID ওয়ালেটের মাধ্যমে।
  • ৩টি বিশেষ ধাপে ফেস ভেরিফিকেশন বা ছবি ভেরিফাই করুন।

ধাপ ৬: ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড সেট

এই ধাপে আপনাকে পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে। NID Wallet এর মাধ্যমে ফেস ভেরিফিকেশন সফল হবার সাথে সাথে কম্পিউটার থেকে উক্ত পেইজ থেকে রিডাইরেক্ট হয়ে ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড সেট পেজে নিয়ে আসবে, তবে আবেদনকারী চাইলে পাসওয়ার্ড সেট এড়িয়ে যেতে পারেন। তবে পাসওয়ার্ড সেট করা সর্বোত্তম হিসেবে বিবেচিত।

ধাপ:৭ অ্যাকাউন্টে প্রবেশ

সপ্তম ধাপে আপনি আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে আপনি আপনার ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড মনে রাখুন পরবর্তীতে লগইন করার জন্য।

লগইন করার পর আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারে জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর প্রদর্শন করবে যার মধ্যে আপনার ভোটার এলাকা, ভোটার নম্বর, সিরিয়াল নম্বর, পিন নম্বর, আইডি কার্ড নম্বর এ সকল তথ্য প্রদর্শিত হবে।

ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে আপনার জাতীয় পরিচয় পএ অর্থাৎ আইডি কার্ড চেক করতে পারবেন ও ডাউনলোড করতে পারবেন।

NID নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করা

NID নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক করার জন্য আপনাকে উপরোক্ত সকল ধাপ আপনাকে অনুসরণ করতে হবে তা উপরোক্ত ধাপের অনুরূপ। যেমন:

আপনাকে services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইট প্রবেশ করে আপনার অ্যাকাউন্ট  না থাকলে রেজিস্ট্রেশন বাটনে ক্লিক করতে হবে অথবা পূর্বে যদি রেজিস্ট্রেশন করে থাকেন সেক্ষেত্রে লগইন বাটনে জাতীয় পরিচয় নম্বর বা ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড এবং ক্যাপচা পূরণ করে লগইন বাটনে ক্লিক করতে হবে।

উল্লেখ্য যে আপনি যদি রেজিস্ট্রেশন না করে থাকেন তাহলে ভোটার নম্বরের মাধ্যমে ৭টি ধাপের অনুরূপ আপনাকে ধাপ অনুসরণ করতে হবে।

লগইন করার পর ড্যাসবোর্ড থেকে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে আইডি কার্ড দেখতে ও ডাউনলোড করতে পারবেন।

ফরম নম্বর দিয়ে আইডি কার্ড বের করার উপায়

ফরম নম্বর ভোটার নম্বরের অনুরূপ একটি নাম। উপরের ৭টি ধাপ অনুসরণ করে আপনি ফর্ম নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করতে পারবেন।

জাতীয় পরিচয় পত্র সংক্রান্ত প্রশ্ন ও উওর

জাতীয় পরিচয় পত্র সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রশ্ন রয়েছে যা আমরা অনেকেই অনলাইনে অনুসন্ধান করে থাকি তবে এ সকল প্রশ্নের মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নসমূহ নিম্নে উপস্থাপন করা হয়েছে:

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কতদিন লাগে?

সাধারণত ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন সময় লাগবে এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে ভোটার কার্ডের সংশোধনের উপর। সাধারণত ৭ কর্ম দিবস থেকে ৩০ তম কর্ম দিবসের মধ্যে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন হয়ে যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে বিলম্ব হতে পারে।

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কতদিন লাগে?

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন হতে কতদিন লাগে এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে সংশোধনের প্রকারের উপর। তবে নির্বাচন অফিসার যদি মনে করেন আইডি কার্ড আর সংশোধনের জন্য তিনি আবেদনকারীকে স্বশরীরে নির্বাচন অফিসে আহ্বান করবেন নির্দিষ্ট তারিখে। সে ক্ষেত্রে কিছুদিনের মধ্যেই ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করা যায়।

পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক করার উপায় কী?

পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক করার জন্য আপনাকে অবশ্যই উপরোক্ত সকল ধাপ অনুসরণ করতে হবে এক্ষেত্রে আপনি যদি পূর্বে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন না করে থাকেন তাহলে রেজিস্ট্রেশন করুন অথবা রেজিস্ট্রেশন করে থাকলে লগইন করে পুরাতন ভোটের আইডি কার্ড চেক করতে পারবেন।

ভোটার আইডি কার্ড যাচাই ওয়েবসাইট লিংক কী?

ভোটের আইডি কার্ড যাচাই করার জন্য আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ঠিকানা: https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/

ভোটার নাম্বার বা NID নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক করতে কত টাকা লাগে?

নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক করতে কোন অর্থ প্রকার খরচ হয় না। তবে আপনি যদি কোন কম্পিউটার দোকান থেকে নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক করে থাকেন ও জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করে থাকেন সেক্ষেত্রে উক্ত দোকানের মালিক ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকা চার্জ করতে পারেন।

টোকেন দিয়ে আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম কী ?

টোকেন দিয়ে আইডি কার্ড চেক করার আজ জন্য আপনাকে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অর্থাৎ লিংক এ প্রবেশ করতে হবে “রেজিস্টার করুন” বাটনে ক্লিক করুন সকল প্রয়োজনীয় তথ্য টোকেন,বর্তমান ও স্থানী ঠিকানা, মোবাইল নম্বর প্রদান করুন, ফেস ভেরিফাই করে ড্যাসবোর্ডে লগইন করুন।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয়?

আপনি বা যার ভোটের আইডি কার্ড সংশোধন করবেন তার যে বিষয়ে ভুল রয়েছে কেবলমাত্র সে বিষয়ের কাগজপত্র প্রয়োজন হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে,
কোন ব্যক্তির নাম দীপ কর্মকার হলে আইডি কার্ডে যদি ভুল হয়ে টপ কর্মকার আসে সেক্ষেএে কেবল মাএ উক্ত ব্যক্তির অনলাইন জন্ম নিবন্ধন এর কপি প্রয়োজন হবে।

ভোটার আইডি কার্ড আর চেক করা কেন জরুরী?

সাধারণত ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন হয়ে থাকে তবে কিছু আমাদের আইডি কার্ডে কিছু ভুল বা সমস্যা থেকে থাকে। এ সকল সমস্যা আর সমাধান করার জন্য ও সংশোধন অনুমোদন প্রাপ্ত হয়েছে কিনা এ কারণে জন্য ভোটার আইডি কার্ড চেক করা বেশ জরুরী।

শেষ কথা

জাতীয় পরিচয় পএ একজন মানুষের একটি দেশের নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র। এটি পৃথিবীর সকল দেশ তাদের স্থানীয় বসবাসকারী মানুষদের বিনামূল্যে প্রদান করে থাকে। আমাদের সকলের দায়িত্ব আমাদের নিজস্ব জাতীয় পরিচয় পত্র যাচাই করে নেওয়া। প্রত্যাশা করি আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে, নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক কিভাবে করতে হয় এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। তবে এ পোস্টটি সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *